স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাজন সাহার দায়িত্বে প্রায় ১১ লাখ টাকার মালমাল বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। অলিম্পিক গণিত উপকরণ প্রাথমিক ১ম ও২য় শ্রেণীর জন্য এবং ৩য় থেকে৫ম শ্রেণীর শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলেন শিক্ষক নেতা গোপাল চন্দ্র দে ও প্রধান শিক্ষক সুদীপ্ত রায় ।চিতলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দিরাই উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক গোপাল চন্দ্র দে বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাজন সাহাসহ ১৪ সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি কমিটির মাধ্যমে শিক্ষা উপকরণ ক্রয় ও বিক্রয় নামে অপ্রয়োজনীয় ও নিম্নমানের গণিত অলিম্পিক ও শিক্ষা উপকরণ পন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক ধরিয়ে দেন। ৬ হাজার৭০০ টাকা মূল্য নির্ধারনী বক্সের কার্টোন প্যাকেট ২৪ শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যাহা বিগত বছরেও দিরাই উপজেলায় ১শতটি প্রতিষ্টানেও ক্রয় করা হয়েছিল। একই পন্য আবারও সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতামূলক করেই শিক্ষা কর্মকর্তার তত্তাবধানে ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্তে প্রতিষ্টানের শিক্ষকদের কাছে হস্তান্তর করা হয় ।নিয়ম অনুযায়ী ১ম ও ২য় শ্রেণীর জন্য প্রতিষ্ঠানে না থাকা শিক্ষা উপকরণগুলোই ক্রয় করতে হয় কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে আবারও ১৬৩ টি বিদ্যালয়ের জন্য ৬৭০০ টাকা করে ১৫০ টি বিদ্যালয়ের জন্য ১০লাখ ৯২ হাজার১০০ টাকার পন্য ক্রয় করাটা অনিয়ম ও দূর্নীতির সামিল। ক্রয়কৃত উপকরণগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য ২হাজার থেকে ২ হাজার ৫শত টাকার পণ্য হবে।হাতে পাওয়া পণ্য দেখে অনেক শিক্ষকই এই ক্রয়কমিটির অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।বিগত বছর প্রতিটি পন্যের নির্ধারিত মূল্য উল্ল্যেখ থাকলেও এই বছর শুধু সম্পূর্ন প্যাকের মূল্য একত্রিত ৬হাজার ৭শত টাকা বলে দিরাই মডেল সঃ প্রাঃ বিদ্যালয় হতে শিক্ষক প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।যারা উপকরণ নেননি তাদেরকেও দ্রুত এসে নেওয়ার জন্য বলা হয়ে থাকে।
ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা রাজন সাহাকে বৃহস্পতিবার বিকালে অফিসে না পেয়ে উনার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে
দৈনিক সত্য প্রবাহ ডটকমকে জানান আমি সুনামগঞ্জ একটি ট্রেনিংএ আছি ।শিক্ষা উপকরনে আমার সরাসরি কোন যোগসূত্র নেই এইখানে শিক্ষক প্রতিনিধি ১৩জন সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্ত মতেই প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে এবং শিক্ষক প্রতিনিধিগনই তা বিতরণ করেন।মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত জানাতে সরাসরি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে জানান।
দিরাই উপজেলার প্রধান শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক সুদীপ্ত দাস বলেন স্লিপের টাকায় সাধারনত জরুরী শিক্ষা উপকরণ যেমনঃ চক, ডাস্টার বাচ্চাদের স্পোর্টসের কিছু পন্য মা সমাবেশের প্রোগ্রাম করা , নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রতিষ্টানের ব্যবহৃত টেবিল, চেয়ার বা আশপাশ ইত্যাদি সংস্কারেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে । তবে একই পন্য আবারও ক্রয় করা ,যেইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ পর্যাপ্ত আছে তা বারবার ক্রয় করা এবং নিম্নমানের পন্য প্রতিষ্টানকে বাধ্যতামূলক করে বাজেট করাটা অনিয়ম ও দূর্নীতির সামিল।
উত্তর নাগেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন স্লিপের টাকায় পন্য কেনার বিষয়ে বোর্ড কমিটি করা হয়।বোর্ডের সিদ্ধান্তে উনারা কিছু পন্য এনে দেখান এর মধ্যে শিক্ষকদের আনা পন্যের চেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পন্যটি ভালো বলে উনার দেখানো পন্যগুলোই নির্ধারন করা হয়। এতে ক্রয় কমিটি ও বিক্রয় কমিটির অনিয়ম বা দূর্নীতি থাকতেও পারে। তবে সর্বসম্মতি ক্রমেই উক্ত মালামাল বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই আমি জানি। তবে কোন অনিয়ম ও দূর্নীতি হলে তাহা তদন্ত করে উদঘাটন করা উচিৎ।
Leave a Reply